
“কুড়িগ্রামের বন্যার্তদের জন্য সরকারী আর সরকার দলীয় এমপিদের বাইরে সাহায্য খুব বেশী একটা দেখা যাচ্ছে না
মনে পরে চেন্নাইর ১০০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম বন্যার কথা। দুই হাজার পনের সাল। মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ পানির নিচে।
এগিয়ে আসল ইন্ডিয়ার লিডিং কর্পোরেট কোম্পানিগুলো।
.
কগনিজেন্ট নামক লিডিং আইটি কোম্পানি সাথে সাথে ৬৫ কোটি টাকার ডোনেশন ঘোষণা করল বন্যা দুর্গতদের জন্য।
.
লেজেন্ডারি রতন টাটার কোম্পানি টাটা অটোমোবাইলস দান করল ৫০ কোটি রুপি। টিভি এস মোটর্স ১ লাখ প্যাকেট খাবার সাথে বাড়তি ৫০ টন খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করল।
.
একুয়াফিনা ১ কোটি বোতল খাবার পানি সরবরাহ করলে ধীরে ধীরে।
সিটি ব্যাংক ,রিলায়েন্স ,এয়ারটেল ইন্ডিয়া কে এগিয়ে আসল না?
আর আমাদের দেশের স্কয়ার ,বেক্সিমকো ,প্রাণ আর এফ এল ,ওরিয়ন গ্রুপের কোটিপতিরা কই? খবর নাই। ক্লাসের পার্থক্য আছে বুঝতে হবে।
.
২০১৭ সালের গুজরাট বন্যা। লেজেন্ডারি মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নিতা আম্বানি নিজের ১০০ কোটি টাকার রাজপ্রাসাদ ছেড়ে নেমে আসলেন গুজরাটের বন্যা পিরিত গায়ে। নিজে বন্যা দুর্গত এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে মিশে গেলেন। নিজে সার্ভে করে বের করলেন সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত চারটি গ্রাম বের করলেন। ফোন দিলেন স্বামী আম্বানি কে।
.
পরেরদিন রিলায়েন্স গ্রুপ ঘোষণা দিল গুজরাটের বন্যা আক্রান্ত ৪ টি গ্রামের প্রতিটি বৃদ্ধ, বৃদ্ধা , শিশুর খাদ্য , পানি ,ঘর বাড়ি বানিয়ে দেয়া এমন কি ভেঙ্গে পড়া স্কুল বানিয়ে দেয়ার দায়িত্ব রিলায়েন্স গ্রুপের্। চার চার টি গ্রামের সব মানুষের দায়িত্ব নেয়া কি বুঝেন?
আমাদের মিলিয়নিয়ার প্লাস ফিলানথ্রোপিস্ট প্লাস নোবেল লড়িয়েট কই? হিলারীর ফান্ডের জন্য ডোনেশন তুলছেন?
আমাদের মাল্টি মিলিয়নিয়ারদের ততোধিক দেমাগী বৌ রা কি। আপন জুয়েলার্সের পোলারা কি? ফাইভ স্টারে লুকাইয়া আছেন?
নাকি নিজেরে আম্বানির চাইতে বেশী হ্যাডমওয়ালা ভাবেন। কাজের পোলা হওয়ার যোগ্যতা নাই আপনাদের্।
.
এবার আসি জাপানের ভয়ঙ্কর তহোকু আর্থকোয়েকের ঘটনায়।
ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জাপানি কোম্পানিগুলোর টোটাল ডোনেশন কত ছিল জানেন। মাত্র ১৩০ মিলিয়ন ডলার্।
সফটব্যাঙ্ক দিল দেড় কোটি ডলার ,নিপ্পন দিল ১.২ কোটি ডলার ,স্যামসাং ৭.৭ মিলিয়ন ডলার্। জাপানি মিনারেল ওয়াটার কোম্পানি এবং মেডিসিন কোম্পানি গুলো এত বেশী পানি এবং মেডিসিন সরবরাহ করল যে প্রয়োজনের চাইতে বেশী হয়ে গেল।
দিস ইজ কল্ড অনেস্ট বিজনেস।
.
আমাগো দেশের স্কয়ার গ্রুপ। ফার্মাসিউটিক্যাল আছে ,আছে হাসপাতাল। চাইলেই ২০ টা মেডিকেল টিম গঠন করে বন্যা দুর্গত এলাকায় পাঠাতে পারে। দশ হাজার মানুষের মেডিসিন সরবরাহ করতে পারে।
.
ঠিক সেইম কাজটা করতে পারে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীর তালিকায় স্থান পাওয়া সালমান এফ রহমান সাবের বেক্সিমকো ফার্মা। তাতে কি এফ রহমান সাবের হাজার হাজার কোটি টাকার থেকে কত টাকা মাইনাস যাবে। বেশী হলে এক কোটি।
.
প্রাণ আর এফ এল হাজার কোটি টাকার বিজনেস করে। ২০ হাজার কর্মচারীর বেতন দেয়। এক লাখ খাবার প্যাকেট সরবরাহ করলে তাগো টাকায় কি টান পইড়া যাইব?
.
পারটেক্স গ্রুপ এক লাখ মামের বোতল সরবরাহ করলে তাগো কোম্পানি মনে হয় দেওলিয়া হইয়া যাইব।
গ্রামীনফোন ,এয়ারটেল ,ব্রিটিশ আমেরিকান টোবোকো তো বাদই দিলাম. বিদেশী কোম্পানি। কোন ঠেকা পড়ছে।
.
কিন্তু স্কয়ার বলেন বেক্সিমকো বলেব কেউই এগিয়ে আসবে না বন্যার্তদের সাহায্যে। তাদের যুক্তি তারা ব্যবসা করতে নামছে।
তা ভাই আপনেগো ব্যবসা কি অনিল আম্বানি ,রতন টাটা ,স্যামসাং এর চাইতে বড়। আপনেগোরে আজকে কিনা কালকে বাজারে বেইচা দেয়ার ক্ষমতা রাখে এরা।
.
সমস্যাটা হইল আপনেরা ছোটলোক।
.
সমস্যাটা হইল আমাগোর দেশে জাকারবার্গ , আম্বানি , টাটাদের মত বড় মনের জ্ঞ্যানী বিলিয়নিয়ার রা জন্মান নি। জন্মাইছে মানুষের রক্ত চুষে খাওয়া ,শেয়ার বাজারের টাকা মারা কোটিপতিরা।
এবার আসি সেলেব্রেটিদের ক্ষেত্রে। চেন্নাই ফ্লাডে রজনিকান্ত ১০ কোটি টাকা ডোনেট করেছিলেন। শাহরুখ খান করেছিলেন এক কোটি টাকা। ঋত্তিক ,আল্লু অর্জুন ,এ আর রেহমান থেকে শুরু করে অনেকেই ২৫ লাখ থেকে এক কোটি টাকা ডোনেট করলেন।
আমাগো দেশের সাকিব খান ,তাহসান অন্যান্য সেলেব্রেটিরা কই?
কিছু ক্রিকেটার হেল্প করতেছেন তাদের কে ধন্যবাদ। আরে ভাই এক কোটি না হোক এক লাখ টাকা করে দেয়ার মত সামর্থ্য কি আপনাদের নাই? হোয়াট আ শেম।
এই বন্যা দুর্গত মানুষগুলোই আপনাদের দর্শক ,আপনাদের ফ্যান আপনাদের খেলার ভক্ত। কোন দায়িত্ব কি নেই মানুষের প্রতি আপনাদের?
লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিয় ওয়াইল্ড লাইফ এনিমেল নিয়া কাজ করে। অস্কার পাইয়া স্পিচে নিজের কথা না পরিবেশ দূষণ নিয়ে কথা বলে। এঞ্জেলিনা জোলি আফ্রিকা যাইত এতিম বাচ্চাদের এডোপ্ট করে।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নেপালের ভূমিকম্পে ডোনেট করে ৫ মিলিয়ন ডলার্।
আর আপনারা নিজেদের দেশের বন্যা আক্রান্ত মানুষদের চিনেনি না।
সত্যিকার অর্থেই ইউ গাইজ হ্যাভ লেট আস ডাউন।
বাই দা ওয়ে টাকা পয়সা থাকলে বড়জোর কোটিপতি হওয়া যায় ,ফ্যান থাকলে সেলেব্রেটি হওয়া যায় কিন্তু লেজেন্ড হইতে হইলে মন থাকা লাগে।
( বিঃদ্রঃ যেসব কোম্পানি এবং সেলেব্রেটি এগিয়ে এসেছেন আপনাদের কে ধন্যবাদ। আপনারাই সাধারণ মানুষের জন্য। একজাম্পল সেট করবেন এদেশে।